শুক্রবার ২২ নভেম্বর ২০২৪

সম্পূর্ণ খবর

রাজ্য | Election: ‌‌ভোট দিতে পারলে বুঝি, বেঁচে আছি

Sagarika Duttachowdhury | ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ১২ : ১৭Rajat Bose


যামিনী মণ্ডল:‌ সেই কবে থেকে ভোট দিচ্ছি। আমি তো পড়তে শিখিনি। তাই চিহ্ন দেখে ভোট দিই। গতবারও হুইলচেয়ারে গিয়ে ভোট দিয়ে এসেছি। এবার বোধহয় আর পারব না। ওঁরা যদি আমার বাড়িতে এসে আমার ভোটটা নিয়ে যায়!‌ আসলে ভোটটা দিতে পারলে মনে হয় বেঁচে আছি। বেশ ভাল লাগে। কতদিনের অভ্যেস।
সেকালে অবশ্য ভোটের চেহারা এমন ছিল না। ভোটের দিনটা আমাদের কাছে ছিল দুর্গাপুজোর মতো। নতুন শাড়ি পরে সেজেগুজে ভোট দিতে যেতাম। ভেতরে ভেতরে একটা উত্তেজনা আর ভাললাগা কাজ করত। ভোটের দিনটাকে মনে হত বিশেষ একটা দিন। সারাবছর বাড়িতে স্বামী, ছেলেমেয়ে, সংসারের পিছনেই সময় কেটে যেত। গ্রামের পুজো দেখতে দুর্গাপুজোর সময় ছাড়া তেমন একটা বাইরে বেরোনো হত না। তাই ভোটের দিন সকালে উঠেই স্নান সেরে নিতাম। বাড়িতে রান্নার ঝঞ্ঝাট রাখতাম না। আমাদের তখন বেশ অভাবের সংসার। তবু বাক্সে দু–একটা যে শাড়ি আছে তা থেকেও বাছাই করে রাখতাম। সেটি পরে যেতাম ভোট দিতে। লাইনে অনেকক্ষণ দাঁড়াতে হত। কিন্তু তাতে কোনও কষ্ট হত না বরং বেশ মজা হত। কারণ গ্রামের অনেক মহিলা, দূরের আত্মীয়, অনেক দূরের পরিচিতরা ভোট দিতে এসেছেন। তাঁদের সঙ্গে দেখা হত যে!‌ লাইনে দাঁড়িয়েই চলত হাসি, ঠাট্টা, মজা, এ–বাড়ি ও–বাড়ির চর্চা। আমার চার ছেলে। এক ছেলে চাকরি করে দূরে। ভোট এলেই চলে আসত। শুধু ও নয়, যারাই একটু দূরে থাকত ভোটের সময় ঠিক চলে আসত সবাই। ভোটের লাইনে পাড়া প্রতিবেশীদের সঙ্গে ওদেরও দেখা হত, কথা হত। 
এখন আমার বয়স ৯১ বছর। বাড়ি আমার পূর্ব মেদিনীপুরের ময়না থানার অন্তর্গত আড়ংকিয়ারানা গ্রামে। তমলুক শহর থেকে ২৬ কিলোমিটার দূরে। লোকসভা কেন্দ্র তমলুক এবং বিধানসভা কেন্দ্র ময়না। এই পূর্ব মেদিনীপুরেই সাতপুরুষ ধরে আমাদের বাস। আমার স্বামী, শ্বশুর, দাদু, দাদুর দাদু, তাঁর দাদু— সবাই এই ময়নারই বাসিন্দা। গাঁয়ে–গঞ্জে কিন্তু আমরা মহিলারা দল বেঁধে ভোট দিতে যেতাম। আবার হই হই করতে করতে একসঙ্গে ফিরতাম। তেমন কোনও ঝুটঝামেলার কথা মনে পড়ে না। ভোট হত অনেক রাত অবধি। আমরা মেয়েরা ভোট দিয়ে বাড়ি ফিরে সন্ধেবেলায় সবাই বাড়ির উঠোনে। গোল হয়ে বসে মুড়ি খেতাম আর ভোটের গল্পেই মশগুল থাকতাম। চড়ুইভাতির মতো ছিল। তখন তো টিভি ছিল না, বিদ্যুৎও ছিল না। বাড়িতে অন্যদিনের তুলনায় একটু বাড়তি ভূরিভোজের আয়োজন থাকত। বুথের বাইরে রাস্তাঘাটেও বিভিন্ন দল একটু আধটু জল, চা, খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা করত। সবার বাড়িতে তো রেডিও ছিল না। তাই ফল ঘোষণার দিন পাড়ার সবাই মিলে কারও একটা বাড়িতে জমায়েত হত। রেডিওতে আমার স্বামী, ছেলেরা শুনত ভোটের খবরাখবর। আমরা মেয়েরা থাকতাম একজোট হয়ে।
প্রথাগত পড়াশোনা হয়নি। রাজনীতির ‘‌র’ বুঝি না। ছেলেদের কাছ থেকে শুনে শুনে সাময়িক খবরাখবর জানার চেষ্টা করি। ইদানীং ভোট নিয়ে বেশ ঝুটঝামেলার কথা কানে আসে। সে সময় এমনটা ছিল না। থাকলেও এত কম যে সবার কানেই আসত না।
আর একটা কথা। ওই সময় কেন্দ্রীয় বাহিনী বলে কোনও শব্দও শুনিনি। তা খায় না মাথায় দেয় জানতাম না। এখন তো কথায় কথায় এই নামটা শুনি। আমি অবিভক্ত বাংলা দেখেছি। অনেক লড়াই দেখেছি। তখন আলাদা আলাদা এত দল ছিল না। আমার চার ছেলেই সরকারি চাকরি করে। আমরা কৃষক পরিবার। চাষবাস করেই ছেলেদের মানুষ করেছি। আমাদের পরিবারের কেউ কখনও রাজনীতির সঙ্গে কোনওদিন যুক্ত ছিল না, এখনও নেই। বাগচা গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীনে আড়ংকিয়ারানা কালীতলা প্রাথমিক বিদ্যালয় হল আমাদের বুথ। গেল বারেও সেখানেই আমি ভোট দিয়েছি। হুইলচেয়ারে বসে ভোট দিয়েছি। তবে এ বছর শরীরটা খুবই খারাপ। তাই কতটা পারব, চিন্তায় আছি। আমার ভোটটা যদি বাড়ি এসে নিয়ে যেত!‌ আসলে ভোটের অধিকারটা পেলে ভাল লাগবে। আমি যে বেঁচে আছি সেই অনুভূতিটা পাব।‌‌











বিশেষ খবর

নানান খবর

নানান খবর

কংশাল ছুৎমার্গ ছেড়ে নকশালদের সঙ্গে সিপিএমের জোট, মনে ধরল কি ভোটারদের? উত্তর মিলবে শনিবার...

সরকারি জমিতে লাইন দিয়ে তৈরি হয়েছে দোকানঘর, পঞ্চায়েত প্রধানকে শোকজ করলেন বিডিও...

অর্ডার দিয়েও দেখা নেই খাবারের, জানতে চাইলে দোকানদারের ঘুষিতেই মাথা ফাটল খরিদ্দারের...

হাত বাড়ালেন বিডিও, বিশেষভাবে সক্ষম মহিলাদের স্বনির্ভর করে তুলতে খুলে দেওয়া হল দোকান...

‘ডাক্তারবাবু এই সাপ আমায় কামড়েছে’, বর্ধমানে বিষাক্ত রাসেল’স ভাইপার নিয়ে হাসপাতালে হাজির যুবক...

দাউদাউ করে জ্বলছে রিষড়া ওয়েলিংটন জুট মিল, ঘটনাস্থলে দমকল...

বাড়ির ছাদে হঠাৎ বিকট শব্দ! তড়িঘড়ি ছুটে গিয়ে মহিলা দেখলেন রক্তে ভাসছে ছাদ, তারপর যা হল.......

ব্যাগে রাখা টাকা না পেয়ে স্কুলেই পড়ুয়াদের পোশাক খুলিয়ে মার শিক্ষিকার...

শিশু সচেতনতায় চুঁচুড়া ট্রাফিক গার্ডের অভিনব উদ্যোগ...

দার্জিলিং থেকে যাচ্ছিলেন সান্দাকফু, পূরণ হল না শখ, মাঝরাস্তায় মৃত্যু কলকাতার পর্যটকের...

নিজের ঘরেই ডাকাতির ছক, কারণ জানাজানি হতেই চরম পরিণতি ব্যক্তির...

বরাদ্দ পাঠিয়েছে সরকার, তবু মজুরি পাননি গ্রাম উন্নয়ন কর্মীরা, মিনাখাঁয় তালাবন্দি বিডিও ...

৩০০টাকা দৈনিক উপার্জনেই কামাল দেখালেন বাংলার ছেলে, নিট পরীক্ষার ফল দেখে চমকে গেল দেশ...

বন্ধ করে দেওয়া হল সাতটি নার্সিংহোম, ৮৭টি নার্সিংহোমে পাঠানো হল নোটিশ, কড়া পদক্ষেপ স্বাস্থ্য দপ্তরের ...

বাড়ির কাছেই উন্মত্ত বাইসনের তাণ্ডব, মৃত্যু হল একজনের, আহত এক ...



সোশ্যাল মিডিয়া



04 24